Notes![what is notes.io? What is notes.io?](/theme/images/whatisnotesio.png)
![]() ![]() Notes - notes.io |
ABDULLAH ALMAHMUD·SATURDAY, 23 DECEMBER 2017
(সংক্ষেপে বিভিন্ন সমস্যার জন্য ইসলাম সম্মত ঝাড়ফুঁক)
বিষয়সূচি:
রুকইয়াহ পরিচিতি
শারীরিক অসুস্থতা
বদনজর
জিনের আসর
ওয়াসওয়াসা রোগ
কালো যাদু
রকইয়ার আয়াত
মাসনুন আমল
[১] অবতরণিকাঃ
রুকইয়া শারইয়াহ বিষয়ে অনেক লম্বা চওড়া লেখা আছে, ইতোমধ্যে আমাদের রুকইয়াহ শারইয়াহ সিরিজও শেষ। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই এবিষয়ে বই প্রকাশ হবে। আজ আমরা সংক্ষেপে রুকইয়া পরিচিতি এবং বিভিন্ন সমস্যার জন্য রুকইয়া করার পদ্ধতি আলোচনা করবো। বলতে পারেন এই লেখাটি অতীত ও ভবিষ্যতের পুরো রুকইয়াহ সিরিজের সারাংশ।
এর প্রথম সংস্করণ ১৭ জুন প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর কিছু সংশোধন এবং সংযোজন করা হয়েছে। এটি চতুর্থ সংস্করণ। এই লেখায় আরও কিছু যোগ করার পরামর্শ থাকলে জানাবেন, আর কোনো পুস্তক-পত্রিকা অথবা ফেসবুকের বাহিরে অন্য কোথাও প্রকাশ করতে চাইলে অনুগ্রহ পুর্বক অনুমতি নিবেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিফাজত করুন। আমীন!
[২] প্রাথমিক ধারণাঃ
রুকইয়াহ কী? রুকইয়াহ অর্থ ঝাড়ফুঁক করা, মন্ত্র পড়া, তাবিজ-কবচ, মাদুলি ইত্যাদি। আর রুকইয়াহ শারইয়্যাহ (رقيةشرعية) মানে শরিয়াত সম্মত রুকইয়াহ, কোরআনের আয়াত অথবা হাদিসে বর্ণিত দোয়া দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা। তবে স্বাভাবিকভাবে ‘রুকইয়া’ শব্দটি দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা বুঝায়। এই ঝাড়ফুঁক সরাসরি কারো ওপর হতে পারে, অথবা কোনো পানি বা খাদ্যের ওপর করে সেটা খাওয়া অথবা ব্যাবহার করা হতে পারে। এক্ষেত্রে রুকইয়ার পানি, অথবা রুকইয়ার গোসল ইত্যাদি পরিভাষা ব্যবহার হয়। আর সবগুলোই সালাফে সালেহিন থেকে বর্নিত আছে।
রুকইয়ার বিধানঃ রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “রুকইয়াতে যদি শিরক না থাকে, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।” (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৫৪৪)
বিশুদ্ধ আক্বিদাঃ উলামায়ে কিরামের মতে রুকইয়া করার পূর্বে এই আক্বিদা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া উচিত ‘রুকইয়া বা ঝাড়ফুঁকের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই, সব ক্ষমতা আল্লাহ তা’আলার, আল্লাহ চাইলে শিফা হবে, নইলে নয়।’
রুকইয়া প্রকারভেদঃ বিভিন্ন ভাবে রুকইয়া করা হয়, যেমনঃ দোয়া বা আয়াত পড়ে ফুঁ দেয়া হয়, মাথায় বা আক্রান্ত স্থানে হাত রেখে দোয়া/আয়াত পড়া হয়। এছাড়া পানি, তেল, খাদ্য বা অন্য কিছুতে দোয়া অথবা আয়াত পড়ে ফুঁদিয়ে খাওয়া ও ব্যাবহার করা হয়।
পূর্বশর্তঃ রুকইয়া করে উপকার পেতে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন।
নিয়্যাত (কেন রুকইয়া করছেন, সেজন্য নির্দিষ্টভাবে নিয়াত করা)
ইয়াক্বিন (এব্যাপারে ইয়াকিন রাখা যে, আল্লাহর কালামে শিফা আছে)
মেহনত (অনেক কষ্ট হলেও, সুস্থ হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরে রুকইয়া চালিয়ে যাওয়া)।
লক্ষণীয়ঃ রুকইয়ার ফায়দা ঠিকমতো পাওয়ার জন্য দৈনন্দিনের ফরজ অবশ্যই পালন করতে হবে, পাশাপাশি সুন্নাতের প্রতিও যত্নবান হতে হবে। যথাসম্ভব গুনাহ থেকে বাঁচতে হবে। (মেয়েদের জন্য পর্দার বিধানও ফরজ) ঘরে কোনো প্রাণীর ছবি / ভাস্কর্য রাখা যাবেনা। আর সুরক্ষার জন্য সকাল-সন্ধ্যার মাসনুন আমলগুলো অবশ্যই করতে হবে। আর ইতিমধ্যে শারীরিক ক্ষতি হয়ে গেলে, সেটা রিকোভার করার জন্য রুকইয়ার পাশাপাশি ডাক্তারের চিকিৎসাও চালিয়ে যেতে হবে।
[৩] সাধারণ অসুস্থতার জন্য রুকইয়াহ:
বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের জন্য রাসুল স. থেকে অনেক দু’আ-কালাম পাওয়া যায়, সেসব গুরুত্বের সাথে করা। এছাড়া কোরআন থেকে প্রসিদ্ধ কয়েকটি রুকইয়া হচ্ছে সুরা ফাতিহা, সুরা ফালাক, সুরা নাস এবং ৬টি আয়াতে শিফা (৯/১৪, ১০/৫৭, ১৬/৬৯, ১৭/৮২, ২৬/৮০, ৪১/৪৪)
১. وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ
২. وَشِفَاءٌ لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
৩. يخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاء لِلنَّاسِ
৪. وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
৫. وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
৬. قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاء
এছাড়া রুকইয়া হিসেবে রাসুল স. থেকে বর্ণিত অনেক দো’আ আছে, যেমন-
১. اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ، اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
২. بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ، اللَّهُ يَشْفِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللَّهُ يَشْفِيكَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
৩. بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ، وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ، وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ
৪. اَسْأَلُ اللهَ الْعَظِيْم، رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْم، اَنْ يَّشْفِيَكْ
৫. بِسْمِ اللَّه، بِسْمِ اللَّه، بِسْمِ اللَّه، أَعُوذُ بِعِزَّةِ اللَّهِ وَقُدْرَتِهِ، مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ
এসব আয়াত এবং দোয়াগুলো ৩বার করে পড়ুন, ব্যাথার যায়গায় অথবা রুগীর মাথায় হাত রেখে পড়ুন, অথবা এসব পড়ার পর রুগীর ওপর ফুঁ দিন। পানিতে ফুঁ দিয়ে পান করুন, অথবা অলিভ অয়েলে ফুঁ দিয়ে মালিশ করুন। মধু-কালোজিরায় ফু দিয়ে সকাল করে পানিতে গুলিয়ে খান। এসবের পাশাপাশি শাইখ হুজাইফির রুকইয়াহ, এবং সা’দ আল গামিদির আধাঘণ্টার রুকইয়া শোনা যেতে পারে।
[৪] বদনজর আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ:
বদনজর আক্রান্ত হওয়ার অনেকগুলো লক্ষণ রয়েছে, এরমাঝে কয়েকটি হচ্ছে-
কোন কাজে মনোযোগ না থাকা। নামায, যিকর, পড়াশোনাতে মন না বসা।
প্রায়শই শরীর দুর্বল থাকা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব লাগা।
বুক ধড়পড় করা, দমবন্ধ অস্বস্তি লাগা। মেজাজ বিগড়ে থাকা।
অতিরিক্ত চুল পড়া। প্রচুর গ্যাস হওয়া। এতে ঔশধ-পথ্যে তেমন ফায়দা না হওয়া।
একেরপর এক অসুখ লেগে থাকা, দীর্ঘ চিকিৎসাতেও রোগ ভালো না হওয়া।
ব্যবসায়-লেনদেনে ঝামেলা লেগেই থাকা। সব কিছুতেই লস হওয়া।
জ্বর থাকলেও কিন্তু থার্মোমিটারে না ওঠা। অন্য রোগও আছে, কিন্তু টেস্টে না ধরা পড়া।
[৫] বদনজরের জন্য রুকইয়াহ:
যদি বুঝা যায় অমুকের জন্য নজর লেগেছে, তাহলে তাকে অযু করতে বলুন, এবংওযুর পানি গুলো আক্রান্তের গায়ে ঢেলে দিন। এরপর চাইলে ভালো পানি দিয়ে গোসল করুন। এতটুকুতেই নজর ভালো হয়ে যাবে ইনশা-আল্লাহ।
আর বদনজরের সেলফ রুকইয়া হচ্ছে, বদনজরের রুকইয়া তিলাওয়াত করবেন, অথবা একাধিকবার তিলাওয়াত শুনতে হবে। এর পাশাপাশি রুকইয়ার গোসল করবেন। আর এভাবে লাগাতার ৩ থেকে ৭ দিন করবেন। সমস্যা ভালো হওয়া পর্যন্ত করুন। প্রতিদিন কয়েকবার রুকইয়া শুনুন, আর একবার রুকইয়ার গোসল করুন। সমস্যা ভালো হওয়ার পরেও এরকম কয়েকদিন করা উচিত।
[৬] রুকইয়ার গোসল:
একটা বালতিতে পানি নিবেন। তারপর পানিতে দুইহাত ডুবিয়ে যেকোনো দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক্ব, নাস, শেষে আবার কোনো দরুদ শরিফ-সব ৭বার করে পড়বেন। পড়ার পর হাত উঠাবেন এবং এই পানি দিয়ে গোসল করবেন।
(এগুলা পড়ে পানিতে ফু দিবেন না, এমনিই গোসল করবেন। যদি টয়লেট আর গোসলখানা একসাথে থাকে, তাহলে অবশ্যই এসব বাহিরে বালতি এনে পড়বেন। প্রথমে এই পানি দিয়ে গোসল করবেন, তারপর চাইলে অন্য পানি দিয়ে ইচ্ছামত গোসল করতে পারেন। যার সমস্যা সে পড়তে না পারলে অন্যকেউ তার জন্য পড়বে, এবং অসুস্থ ব্যক্তি শুধু গোসল করবে।)
[৭] জিন আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ:
জিন দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার অনেকগুলো লক্ষণ রয়েছে, এরমাঝে কয়েকটি হচ্ছে-
রাতে ঠিকমত ঘুমাতে না পারা।
প্রায়শই ঘুমের মাঝে বোবা ধরা।
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখা। উঁচু থেকে পড়ে যেতে, কোন প্রাণীকে আক্রমণ করতে দেখা।
দীর্ঘ মাথাব্যথা, অথবা অন্য কোন অঙ্গে সবসময় ব্যাথা থাকা।
নামাজ, তিলাওয়াত, যিকির আযকারে আগ্রহ উঠে যাওয়া।
মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকা, একটুতেই রেগে যাওয়া।
আযান বা কোরআন তিলাওয়াত সহ্য না হওয়া।
[৮] জ্বিনের আসরের জন্য রুকইয়াহ:
যিনি রুকইয়া করবেন তিনি প্রথমে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে নিজের শরীরে হাত বুলিয়ে নিবেন। এরপর রুকইয়া শুরু করবেন। জ্বিনের রুগীর ক্ষেত্রে সাধারণত কথাবার্তা বলে জ্বিন বিদায় করতে হয়। এক্ষেত্রে যিনি রুকইয়া করবেন তাঁকে উপস্থিতবুদ্ধির পরিচয় দিতে হবে। জ্বিনের কথায় ঘাবড়ানো যাবেনা, তার কথা বিশ্বাসও করা যাবে না। হুমকিধামকি দিলে জিনকেই উল্টা ধমক দিতে হবে। রুগীর মাথায় হাত রেখে অথবা (গাইরে মাহরাম হলে) রুগীর পাশে বসে জোর আওয়াজে রুকইয়ার আয়াতগুলো পড়তে থাকুন। পড়ার মাঝেমাঝে রুগীর ওপর ফুঁ দিতে পারেন, আর পানিতে ফুঁ দেয়ার পর মুখে এবং হাতে-পায়ে ছিটিয়ে দিতে পারেন।
রুকইয়ার অনেক আয়াত আছে সেগুলো শেষে বলা হবে। তবে স্বাভাবিকভাবে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ফালাক, সুরা নাস, সুরা সফফাতের প্রথম ১০ আয়াত, সুরা জিনের প্রথম ৯ আয়াত পড়তে পারেন। জ্বিন ছেড়ে দেয়া পর্যন্ত রুগীর কাছে বসে উঁচু আওয়াজে এই আয়াতগুলো বারবার পড়তে হবে আর ফুঁ দিতে হবে অথবা রুগীর মাথায় হাত রেখে পড়তে হবে। একদিনে না গেলে পরপর কয়েকদিন কয়েকঘন্টা করে এভাবে রুকইয়া করে যেতে হবে। ইনশাআল্লাহ এক পর্যায়ে জ্বিন পালাতে বাধ্য হবে।
[৯] বাড়িতে জ্বিনের উৎপাত থাকলে:
বাড়িতে জ্বিনের কোনো সমস্যা থাকলে পরপর তিনদিন পূর্ন সুরা বাক্বারা তিলাওয়াত করুন, এরপর আযান দিন। তাহলে ইনশাআল্লাহ সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। তিলাওয়াত না করে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কয়েকবার যদি সুরা বাক্বারা প্লে করা হয় তাহলেও ফায়দা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে সবচেয়ে ভালো ফল পেলে তিলাওয়াত করা উচিত। এরপর প্রতিমাসে অন্তত এক দুইদিন সুরা বাকারা পড়বেন। আর ঘরে প্রবেশের সময়, বের হবার সময়, দরজা-জানালা বন্ধের সময় বিসমিল্লাহ বলবেন। ঘুমের আগে সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াত পড়বেন। তাহলে ইনশাআল্লাহ আর কোন সমস্যা হবে না।
[১০] ওয়াসওয়াসা রোগের জন্য রুকইয়া:
এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়া। প্রতি নামাজের আগে-পরে, অন্যন্য ইবাদতের সময়, কোন গুনাহের জন্য ওয়াসওয়াসা অনুভব করলে এটা পড়া -
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ، مِنْ غَضَبِهٖ وَعِقَابِهِ، وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ، وَأَنْ يَّحْضُرُوْنِ
2. ওয়াসওয়াসা অনুভব করলে বলা (সুরা হাদীদ, আয়াত নং ৩)
هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْم
[বিশেষতঃ ঈমান নিয়ে সংশয় উদিত হলে এটা পড়া উচিত। আর সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস পড়া]
3. আয়াতুল হারক (আযাব এবং জাহান্নাম সংক্রান্ত আয়াত) বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। এবং প্রতিদিন ৩-৪বার এসবের তিলাওয়াত শোনা।
4. নাপাক থেকে বেচে থাকা, বিশেষত প্রসাবের ছিটা থেকে বাচা। যথাসম্ভব সর্বদা ওযু অবস্থায় থাকা।
5. পুরুষ হলে জামাআতের সাথে নামাজ পড়া, মুত্তাকী পরহেজগারদের সাথে উঠাবসা করা।
6. সকাল-সন্ধ্যায় ও ঘুমের আগের আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করা। টয়লেটে প্রবেশের দোয়া পড়া।
7. আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকা। যথাসম্ভবত ওয়াসওয়াসা পাত্তা না দেয়া; ইগনোর করা, এমনকি মুখে বিরক্তির ভাবও প্রকাশ না করা।
[১১] যাদু আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ:
যাদু করতে জ্বিনের সাহায্য নেয়া হয়, তাই যাদুগ্রস্থ রোগীর মাঝে জিন আক্রান্তের কিছু লক্ষণগুলো পাওয়া যায়। তবে এছাড়াও যাদুগ্রস্থ রোগীর মাঝে কিছু বিশেষ লক্ষণ দেখা যেতে পারে। যেমনঃ
1. হঠাৎ কারও প্রতি বা কোন কিছুর প্রতি তীব্র ভালবাসা অথবা ঘৃণা তৈরি হওয়া, যা আগে ছিল না।
2. বিশেষ কোন কারন ছাড়াই জটিল-কঠিন রোগে ভোগা। যার চিকিৎসা করলেও সুস্থ না হওয়া।
3. পরিবারের মধ্যে ঝগড়া-ঝাটি লেগেই থাকা। বিশেষতঃ স্বামীস্ত্রীর মাঝে।
4. দৃষ্টিভঙ্গি বা ব্যক্তিত্বে ব্যপক পরিবর্তন। যাতে নিজেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়, চারপাশের মানুষও কষ্ট পায়।
5. অদ্ভুত আচরণ করা। যেমন, কোন কাজ একদমই করতে না চাওয়া। কিংবা দিন-রাতের নির্দিষ্ট কোন সময়ে ঘরের বাইরে যেতে না চাওয়া।
আর যাদু আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর রুকইয়ার আয়াতগুলো পড়লে, অথবা অডিও শুনলে অস্বাভাবিক অনুভূতি হয়। যেমন, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, বমি আসা, বুক ধড়ফড় করা, ইত্যাদি।
[১২] যাদু / ব্ল্যাক ম্যাজিক / বান মারার জন্য রুকইয়া:
যাদুর প্রকারভেদ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার রুকইয়া করা হয়। তবে কমন সেলফ রুকইয়া হচ্ছে-
প্রথমে সমস্যার জন্য নিয়াত ঠিক করে, ইস্তিগফার দরুদ শরিফ পড়ে শুরু করুন। তারপর কোন রুকইয়া শুনে নিশ্চিত হয়ে নিন আসলেই সমস্যা আছে কি না! শাইখ সুদাইসের অথবা লুহাইদানের রুকইয়া শুনতে পারেন। সবশেষে একটি বোতলে পানি নিন, এরপর- ক. সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২ খ. ইউনুস ৮১-৮২ গ. সুরা ত্বহা ৬৯নং আয়াত পড়ে ফুঁ দিন।
وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُوْنَ - فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوْا يَعْمَلُونَ - فَغُلِبُوْا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوْا صَاغِرِيْنَ - وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِيْنَ -قَالُوْا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِيْنَ - رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُوْنَ -
.
فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُمْ بِهِ السِّحْرُۖ إِنَّ اللّٰهَ سَيُبْطِلُهُۖ إِنَّ اللّٰهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِيْنَ - وَيُحِقُّ اللّٰهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْكَرِهَ الْمُجْرِمُونَ -
.
وَأَلْقِ مَافِي يَمِيْنِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوْاۖ إِنَّمَا صَنَعُوْا كَيْدُ سَاحِرٍۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتٰى
ঘ. এরপর সুরা ফালাক্ব, সুরা নাস সব ৩বার করে পড়ে ফুঁ দিন।
তিন থেকে সাতদিন সকাল-বিকাল এই পানি খেতে হবে, এবং গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করতে হবে। আর মাসখানেক প্রতিদিন দেড়-দুইঘণ্টা রুকইয়া শুনতে হবে। সাধারণ কোন রুকইয়া, আর সুরা ইখলাস, ফালাক, নাসের রুকইয়াহ। এর পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া করতে হবে।
এভাবে একদম সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রুকইয়া করে যাবেন, সমস্যা বেড়ে গেলেও বাদ দিবেন না। তাহলে ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুতই পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবেন।
[১৩] যাদুর কোন জিনিশ অথবা তাবিজ খুঁজে পেলে:
কি দিয়ে যাদু করেছে যদি পাওয়া যায়, অথবা সন্দেহজনক কোন তাবিজ পেলে উপরে বলা আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিন, এরপর তাবিজ অথবা যাদুর জিনিশগুলো ডুবিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ, তাহলে ইনশাআল্লাহ যাদু নষ্ট হয়ে যাবে। পরে সেগুলো পুড়িয়ে বা নষ্ট করে দিন।
[১৪] যাদু, জ্বিন, বদনজর সম্পর্কিত একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে:
একসাথে একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে প্রথমে বদনজরের জন্য রুকইয়া করতে হবে, এরপর জ্বিনের জন্য এবং যাদুর জন্য রুকইয়া করতে হবে।
[১৫] রুকইয়ার আয়াত:
কোরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াত দ্বারা রুকইয়া করা হয়, তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ কিছু আয়াত হচ্ছে-
সুরা ফাতিহা
সুরা বাকারা ১-৫
সুরা বাকারাহ ১০২
সুরা বাকারাহ ১৬৩-১৬৪
সুরা বাকারাহ ২৫৫
সুরা বাকারাহ ২৮৫-২৮৬
সুরা আলে ইমরান ১৮-১৯
সুরা আ'রাফ ৫৪-৫৬
সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২
সুরা ইউনুস ৮১-৮২
সুরা ত্বহা ৬৯
সুরা মু'মিনুন ১১৫-১১৮
সুরা সফফাত ১-১০
সুরা আহকাফ ২৯-৩২
সুরা আর-রাহমান ৩৩-৩৬
সুরা হাশর ২১-২৪
সুরা জিন ১-৯
সুরা ইখলাস
সুরা ফালাক
সুরা নাস
এই আয়াতগুলো একসাথে পিডিএফ করা আছে, ডাউনলোড লিংক- https://goo.gl/XZ9JuC
[১৬] যাদু, জিন, শয়তান ইত্যাদির ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়:
১. বিষ, যাদু এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাঁচতে সকাল-সন্ধ্যায় এই দোয়া তিনবার পড়াঃ
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মা-তি, মিং-শাররি মা-খলাক্ব। (জামে তিরমিযী, ৩৫৫৯)
২. সব ধরনের ক্ষতি এবং বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকতে এই দোয়া সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার পড়াঃ
بِسْمِ اللهِ الَّذِيْ لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِه شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ العَلِيْمُ
বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা-ইয়াদ্বুররু মা‘আসমিহী, শাইউং ফিলআরদ্বী ওয়ালা- ফিসসামা-ই, ওয়াহুওয়াস সামি’উল ‘আলীম। (জামে তিরমিযী, ৩৩৩৫)
৩. প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস তিনবার করে পড়া। এবং এটা বিশেষ গুরুত্বের সাথে করা। (সুনানে আবি দাউদ)
৪. ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি পড়া এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া। সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস পড়ে হাতের তালুতে ফু দিয়ে পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নেয়া। (বুখারী)
৫. টয়লেটে ঢোকার পূর্বে দোয়া পড়া-
اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা, মিনাল খুবসি ওয়াল খবা-ইছ। (মুসলিম, ৩৭৫)
৬. তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া। প্রতিদিনের অন্যান্য মাসনুন আমল করতে থাকা। এবং আল্লাহর কাছে সবসময় দোয়া করতে থাকা।
------------------------
![]() |
Notes is a web-based application for online taking notes. You can take your notes and share with others people. If you like taking long notes, notes.io is designed for you. To date, over 8,000,000,000+ notes created and continuing...
With notes.io;
- * You can take a note from anywhere and any device with internet connection.
- * You can share the notes in social platforms (YouTube, Facebook, Twitter, instagram etc.).
- * You can quickly share your contents without website, blog and e-mail.
- * You don't need to create any Account to share a note. As you wish you can use quick, easy and best shortened notes with sms, websites, e-mail, or messaging services (WhatsApp, iMessage, Telegram, Signal).
- * Notes.io has fabulous infrastructure design for a short link and allows you to share the note as an easy and understandable link.
Fast: Notes.io is built for speed and performance. You can take a notes quickly and browse your archive.
Easy: Notes.io doesn’t require installation. Just write and share note!
Short: Notes.io’s url just 8 character. You’ll get shorten link of your note when you want to share. (Ex: notes.io/q )
Free: Notes.io works for 14 years and has been free since the day it was started.
You immediately create your first note and start sharing with the ones you wish. If you want to contact us, you can use the following communication channels;
Email: [email protected]
Twitter: http://twitter.com/notesio
Instagram: http://instagram.com/notes.io
Facebook: http://facebook.com/notesio
Regards;
Notes.io Team